বিজ্ঞান ও কুসংস্কার: বিজ্ঞান চেতনার আলোকবর্তিকা
মানব সমাজ সভ্যতার ঊষালগ্ন থেকে জ্ঞান অর্জনের পথে অবিরাম ছুটে চলেছে। এই যাত্রাপথে একদিকে যেমন যুক্তিবাদী মনন এবং অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টির ফসল হিসেবে গড়ে উঠেছে বিজ্ঞান, তেমনি অন্যদিকে ভয়, অজ্ঞতা এবং ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে জন্ম নিয়েছে কুসংস্কার। এই দুই বিপরীত মেরুর সহাবস্থান এবং তাদের মধ্যে নিরন্তর সংঘাতই বর্তমান বিশ্বের অন্যতম উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। আমাদের এই প্রবন্ধে বিজ্ঞান কী, কুসংস্কারের স্বরূপ কী, কেন এটি সমাজে জেঁকে বসে এবং কিভাবে বিজ্ঞান চেতনার বিস্তার ঘটিয়ে আমরা এই অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে পারি, তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে।
বিজ্ঞানের স্বরূপ: যুক্তি ও প্রমাণের পথ
বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি ও জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের একটি সুসংবদ্ধ প্রক্রিয়া। এর মূল ভিত্তি হলো পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বিশ্লেষণ এবং প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। বিজ্ঞান কোনো কিছুকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করে না, বরং যুক্তি ও প্রমাণ দাবি করে। এর লক্ষ্য হলো প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর কার্যকারণ সম্পর্ক উদঘাটন করা, নতুন নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণ সাধন করা এবং অজানা বিষয়কে যুক্তির আলোয় আলোকিত করা।
বিজ্ঞানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হলো:
পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ: নির্দিষ্ট ঘটনা বা বিষয়কে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী পরীক্ষামূলকভাবে সেটির সত্যতা যাচাই করা।
যুক্তিনির্ভরতা: আবেগ বা পূর্বধারণার পরিবর্তে যুক্তি ও কারণের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো।
প্রমাণভিত্তিক: প্রতিটি সিদ্ধান্ত বা তত্ত্বের পক্ষে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করা।
বস্তুনিষ্ঠতা: ব্যক্তিগত আবেগ বা ইচ্ছার প্রভাবমুক্ত হয়ে নিরপেক্ষভাবে সত্যকে তুলে ধরা।
পরিবর্তনশীলতা: বিজ্ঞানের কোনো তত্ত্বই চূড়ান্ত নয়; নতুন প্রমাণ বা তথ্যের ভিত্তিতে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।
প্রগতিশীলতা: বিজ্ঞান নিরন্তর নতুন জ্ঞানের দিকে ধাবিত হয় এবং মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে মহাকাশ গবেষণা, যোগাযোগ প্রযুক্তি থেকে পরিবেশ বিজ্ঞান – বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা মানব জীবনকে সহজ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ করেছে। এটি মানুষকে যুক্তিসঙ্গতভাবে ভাবতে শিখিয়েছে, প্রশ্ন করতে শিখিয়েছে এবং চিরাচরিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস জুগিয়েছে।
কুসংস্কারের স্বরূপ: ভয়, অজ্ঞতা ও অন্ধবিশ্বাসের জালের বুনন
কুসংস্কার হলো যুক্তিবিরুদ্ধ, অপ্রমাণিত এবং অযৌক্তিক বিশ্বাস, যা সাধারণত ভয়, অজ্ঞতা, অনিশ্চয়তা অথবা কোনো নির্দিষ্ট প্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। এগুলোকে কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা বা পর্যবেক্ষণ দ্বারা প্রমাণ করা যায় না, বরং বহুক্ষেত্রে বিজ্ঞান দ্বারা সেগুলো ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কুসংস্কারের জন্ম হয় মূলত অজানা ও অনিয়ন্ত্রিত প্রাকৃতিক শক্তির প্রতি মানুষের ভয় থেকে। যেমন, প্রাচীনকালে মানুষ যখন বজ্রপাত বা ভূমিকম্পের কারণ জানত না, তখন সেগুলোকে দেব-দেবী বা অশুভ শক্তির প্রকাশ বলে বিশ্বাস করত।
কুসংস্কারের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো:
অযৌক্তিকতা: এর পেছনে কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ বা যুক্তি থাকে না।
অপ্রমাণিত: কোনো বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা বা যুক্তি দ্বারা এর সত্যতা যাচাই করা যায় না।
ভয় ও অনিশ্চয়তা: সাধারণত বিপদ বা দুর্ভাগ্য এড়ানোর অথবা সৌভাগ্য লাভের আশায় এর উৎপত্তি।
ঐতিহ্য: বংশপরম্পরায় চলে আসা বিশ্বাস ও প্রথার উপর ভিত্তি করে এগুলো টিকে থাকে।
জ্ঞানের অভাব: সঠিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের অভাবে মানুষ কুসংস্কারের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
গণৎকার, জ্যোতিষী, ওঝা, তান্ত্রিক – এরা মূলত মানুষের ভয় ও দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে কুসংস্কারকে জিইয়ে রাখে এবং নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে। বিড়াল পথ কাটলে অমঙ্গল, পরীক্ষার আগে ডিম না খাওয়া, তুতুল গাছকে অপদেবতার বাসস্থান মনে করা, হাত দেখে ভবিষ্যৎ বলা, অমাবস্যা বা পূর্ণিমার দিনে ভূত-প্রেতের আনাগোনা, তাবিজ-কবজ দিয়ে রোগ নিরাময়ের চেষ্টা – এ সবই সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন কুসংস্কারের উদাহরণ।
বিজ্ঞান ও কুসংস্কারের সংঘাত: আলোর বিরুদ্ধে অন্ধকারের সংগ্রাম
বিজ্ঞান ও কুসংস্কার দুটি সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ধারণা। বিজ্ঞান যেখানে যুক্তির হাত ধরে আলোর দিকে এগোয়, কুসংস্কার সেখানে অন্ধবিশ্বাসের অন্ধকারে মানুষকে আটকে রাখে। এই দুইয়ের মধ্যে সংঘাত অনিবার্য।
ইতিহাস জুড়ে আমরা এই সংঘাতের অসংখ্য উদাহরণ দেখতে পাই। গ্যালিলিও যখন কোপার্নিকাসের সৌরকেন্দ্রিক মতবাদকে সমর্থন করেছিলেন এবং দূরবিনের সাহায্যে তার প্রমাণ দিতে চেয়েছিলেন, তখন ধর্মযাজকরা তাকে কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন, কারণ তা তাদের প্রচলিত বিশ্বাস ও ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। একসময় রোগব্যাধিকে ঈশ্বরের অভিশাপ বা অশুভ শক্তির প্রভাব বলে মনে করা হতো। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে জানা গেল যে রোগ জীবাণু দ্বারা ছড়ায় এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তা নিরাময় করা সম্ভব।
আজও এই সংঘাত বিদ্যমান। যখন কোনো শিক্ষিত ব্যক্তি অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে না গিয়ে ওঝা বা ফকিরের কাছে যায়, যখন মানুষ জ্যোতিষীর কথায় লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে, তখন বুঝতে হবে কুসংস্কারের শিকড় কতটা গভীরে। বিজ্ঞান প্রমাণ করে যে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান মানুষের ভাগ্যের নির্ণায়ক হতে পারে না, অথচ জ্যোতিষশাস্ত্র এখনো সমাজে জাঁকিয়ে বসে আছে। বিজ্ঞান যখন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে লাখ লাখ মানুষের জীবন বাঁচায়, তখন কিছু মানুষ তাকে অস্বীকার করে কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে।
কুসংস্কারের ক্ষতিকারক প্রভাব: ব্যক্তি ও সমাজের অবক্ষয়
কুসংস্কার কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতিসাধন করে না, বরং এর ব্যাপক সামাজিক কুপ্রভাবও রয়েছে।
আর্থিক ক্ষতি: কুসংস্কারের পেছনে মানুষ অযথা অর্থ ব্যয় করে, যা তাদের আর্থিক ক্ষতি সাধন করে। জ্যোতিষী, গণৎকার বা তান্ত্রিকের পেছনে অর্থ নষ্ট করার ফলে অনেক পরিবার পথে বসেছে।
শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি: রোগ নিরাময়ের জন্য আধুনিক চিকিৎসার পরিবর্তে কুসংস্কারের আশ্রয় নিলে অনেক সময় রোগ জটিল আকার ধারণ করে এবং মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। মানসিক দিক থেকেও এটি মানুষকে দুর্বল ও ভীত করে তোলে।
সামাজিক অবক্ষয়: কুসংস্কার সমাজে ভেদাভেদ, বৈষম্য ও হিংসা ছড়াতে পারে। ডাইনি প্রথা বা জাদুবিদ্যা সংক্রান্ত বিশ্বাসে বহু নিরীহ নারী ও পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে। বাল্যবিবাহ, সতীদাহ প্রথা (অতীতে) বা বিভিন্ন অন্ধ আচার-অনুষ্ঠান কুসংস্কারেরই ফসল।
উন্নয়নের অন্তরায়: একটি সমাজ যখন কুসংস্কারের জালে আবদ্ধ থাকে, তখন তার বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ব্যাহত হয়। মানুষ নতুনকে গ্রহণ করতে ভয় পায় এবং পুরাতন কূপমণ্ডুকতায় নিমজ্জিত থাকে।
যুক্তিবাদী চিন্তার অভাব: কুসংস্কার মানুষকে প্রশ্ন করতে শেখায় না, বরং অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে শেখায়। এর ফলে সমাজে যুক্তিবাদী ও সমালোচনামূলক চিন্তার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
বিজ্ঞান চেতনা বা বৈজ্ঞানিক মনন: মুক্তির পথ
কুসংস্কারের অন্ধকার দূর করার একমাত্র পথ হলো বিজ্ঞান চেতনা বা বৈজ্ঞানিক মননের বিকাশ ঘটানো। বিজ্ঞান চেতনা বলতে কেবল বিজ্ঞানের তথ্য ও তত্ত্ব জানা বোঝায় না, বরং এর মূল উদ্দেশ্য হলো একটি যুক্তিভিত্তিক, প্রমাণনির্ভর এবং জিজ্ঞাসু মানসিকতা তৈরি করা। এটি হলো একটি জীবনদর্শন, যা মানুষকে খোলা মনে নতুন ধারণা গ্রহণ করতে শেখায় এবং কোনো কিছুকে সহজে বিশ্বাস না করে তার পেছনে যুক্তি ও প্রমাণ খুঁজতে উৎসাহিত করে।
বৈজ্ঞানিক মননের মূল ভিত্তিগুলি হলো:
প্রশ্ন করার প্রবণতা: সবকিছুকে প্রশ্ন করা, তার কার্যকারণ সম্পর্ক খোঁজা এবং সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত অনুসন্ধিৎসু থাকা।
সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা: কোনো তথ্য বা দাবিকে অন্ধভাবে মেনে না নিয়ে তার সত্যতা ও নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা।
প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ: ব্যক্তিগত আবেগ, গুজব বা ঐতিহ্যের পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
সহনশীলতা ও উন্মুক্ত মন: নিজের মতামতকে আঁকড়ে না ধরে নতুন প্রমাণ বা তথ্যের ভিত্তিতে তা পরিবর্তন করার মানসিকতা।
কারণ-ফলাফলের সম্পর্ক অনুধাবন: প্রতিটি ঘটনার পেছনে একটি নির্দিষ্ট কারণ থাকে এবং সেটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা।
বিজ্ঞান চেতনা বৃদ্ধির উপায়: সম্মিলিত প্রচেষ্টা
বিজ্ঞান চেতনার বিকাশ একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং এর জন্য ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
1. শিক্ষা ব্যবস্থার ভূমিকা:
প্রাথমিক স্তর থেকে বিজ্ঞান শিক্ষা: ছোটবেলা থেকেই শিশুদের মধ্যে অনুসন্ধিৎসু মনোভাব এবং প্রশ্ন করার প্রবণতা তৈরি করতে হবে। শুধু মুখস্থ বিদ্যা নয়, হাতে-কলমে বিজ্ঞান শেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তিবাদী ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনার বিকাশ: পাঠ্যক্রমে এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা শিক্ষার্থীদেরকে যেকোনো বিষয়কে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করতে শেখায়।
শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ: শিক্ষকদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে তারা কেবল তথ্য সরবরাহকারী না হয়ে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক মনন জাগিয়ে তুলতে পারেন।
2. পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশ:
পরিবারে বৈজ্ঞানিক আলোচনা: পরিবারে কুসংস্কারের পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক আলোচনা ও যুক্তিতর্কের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের প্রশ্ন করার আগ্রহকে উৎসাহিত করা।
বিজ্ঞানের প্রতি কৌতূহল সৃষ্টি: বিজ্ঞানকে কঠিন বা নীরস বিষয় না ভেবে, এটি যে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি অংশে জড়িত, তা তুলে ধরতে হবে। বিজ্ঞান মেলা, বিজ্ঞান ক্লাব ইত্যাদি সামাজিক উদ্যোগে অংশগ্রহণ উৎসাহিত করা যেতে পারে।
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতনতা: সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর ক্ষতিকারক দিক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
3. গণমাধ্যমের ভূমিকা:
প্রচার ও প্রসার: টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র ও সামাজিক মাধ্যমগুলোকে বিজ্ঞানভিত্তিক অনুষ্ঠান, তথ্যচিত্র, প্রবন্ধ এবং সচেতনতামূলক প্রচারণায় যুক্ত করতে হবে।
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই: গণমাধ্যমকে কুসংস্কারের মুখোশ উন্মোচনে সাহসী ভূমিকা পালন করতে হবে এবং ভণ্ডদের প্রতারণা সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করতে হবে।
বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করা: জটিল বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলিকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়।
4. রাষ্ট্রের ভূমিকা:
গবেষণায় বিনিয়োগ: বিজ্ঞান গবেষণায় পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ এবং গবেষকদের উৎসাহিত করা।
আইন ও বিধিমালা: কুসংস্কার ও ভণ্ডামি প্রতিরোধের জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন এবং তার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
জনসচেতনতা কর্মসূচি: সরকার কর্তৃক বিজ্ঞান চেতনার প্রসারে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও তার প্রচার।
উপসংহার
বিজ্ঞান মানব সভ্যতার অগ্রগতির আলোকবর্তিকা, আর কুসংস্কার হলো পশ্চাদপদতার এক অদৃশ্য শেকল। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকলেও, আজও বিশ্বের বহু স্থানে কুসংস্কার সমাজের গভীরে জাঁকিয়ে বসে আছে। এই অন্ধকারের জাল ছিন্ন করে আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হলে বিজ্ঞান চেতনার জাগরণ অপরিহার্য। প্রতিটি মানুষ যখন যুক্তি, প্রমাণ ও অনুসন্ধিৎসু মন নিয়ে জীবনকে দেখবে, তখন সমাজের কূপমণ্ডুকতা ও অন্ধবিশ্বাস দূর হবে।
আসুন, আমরা সকলে মিলে এই মহান কর্মে অংশ নিই। নতুন প্রজন্মকে বৈজ্ঞানিক মননে ঋদ্ধ করে তুলি, যাতে তারা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এক উন্নত, যুক্তিবাদী ও মানবিক সমাজ গড়ে তুলতে পারে। বিজ্ঞান চেতনার মাধ্যমেই আমরা একটি প্রগতিশীল, সমৃদ্ধ এবং ভয়মুক্ত ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে সক্ষম হব।